• ঢাকা
  • রবিবার , ১৩ জুলাই ২০২৫ , ভোর ০৪:০৩
  • ২৮ আষাঢ়, ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
হোম / ফিচার

নেশা করার থেকে বড় ভুল একজন ভুল মানুষকে বিয়ে করা!"

রিপোর্টার : দৈনিক আলোর সকাল
নেশা করার থেকে বড় ভুল একজন ভুল মানুষকে বিয়ে করা!" ই-পেপার/প্রিন্ট ভিউ

"নেশা করার থেকে বড় ভুল একজন ভুল মানুষকে বিয়ে করা!"আজকালকার বিয়েতে মেয়েদের কোন শাড়ি মানাবে, কোন চুড়ি মানাবে, কোথায় সাজবে, কী গানে নাচবে এগুলো ডিসাইড করতে এতো সূক্ষ্ণ নজর দেয় যে হবু স্বামীকেই ভালোমতো জেনে নেবার ফুসরত পায় না।

বিয়ের মঞ্চে স্বামী গানের তালে বউয়ের সাথে সুন্দর সুন্দর স্টেপ করলেই মেয়েরা খুশি হয়ে যায়, ভাবে জীবনের বাকিদিনগুলোতেও তার সাথে এভাবেই তাল মেলাবে সে। রঙিন ফটোশ্যুট শেষ হবার পর যখন জীবনসঙ্গীর অন্যরূপ দেখে তখন যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে! স্বামীরই বা দোষ কিসের? বউতো একটা সুন্দর ভেন্যু, শাহী ভোজের মেন্যু, দামি মেকওভার আর সেরা ফটোগ্রাফার চেয়েছিলো। চরিত্র, দায়িত্ববোধ, মানসিকতা নিয়ে কোনো কিছু জানার চেষ্টাও করেনি। 

মেয়েদের বলি, বড় ফটোগ্রাফারের বদলে যে আপনার ছবি বুকপকেটে যত্নে রাখে তাকে চিনুন। দামি মেকওভার দিতে না পারলেও চেহারায় কখনো মারের সামান্য দাগ ফেলবেনা এমন মানুষ খুঁজুন, কাচ্চি না হোক মোটা চালের ভাতটাই যেন বিনি খোঁটায় মুখে তুলে দেয় তেমন মানুষ বাছুন। বোনেরা আমার, ড্রিম ওয়েডিং তিনদিনে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু বাস্তবের মানুষটার সাথে ঘর করতে হবে অনেকদিন। মানুষ ভালো হলে তো আলহামদুলিল্লাহ নতুবা পুঁটি মাছ কাটতে না পারার কারণেও জীবন যেতে পারে! 

খালি জাঁকজমক দেইখেন না। স্বপ্নের মতোন বিয়ের চক্করে স্বামী যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে না আসে

   বিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করা ও বাচ্চার জন্ম দেওয়ার জন্য মানুষ সংসার করে না। সংসার একটা অভ্যেস, যা একসাথে থাকতে থাকতে গড়ে ওঠে, একে অপরের সাথে কথা বলতে বলতে, একে অপরকে সহ্য করতে করতে এই অভ্যেস গড়ে ওঠে।

সংসার মানে হলো একসাথে থাকতে থাকতে একে অপরের গায়ের গন্ধটা আত্মস্থ করে নেওয়া। সংসার মানে হলো মানুষটা মুখের সামনে এসে দাঁড়ালেই মানুষটার মনের ভেতর কি চলছে, সেটা বুঝে ফেলা।

সংসার মানে হলো বর অফিস থেকে ফিরলে এক গ্লাস জল রোজই মুখের সামনে তুলে ধরা।

সংসার মানে হলো ছেঁড়া বোতাম সেলাই করতে করতে নিজেদের ভেতর ভুল বোঝাবুঝি গুলো মাঝেমধ্যে সেলাই করে নেওয়া।

সংসার মানে হলো এডজাস্টমেন্ট, "তোমার আমার" থেকে আমাদের হয়ে ওঠা। সংসার মানে মাছের ঝোলে নুন বেশি হলেও চুপচাপ হাসিমুখে খেয়ে ফেলা, সংসার মানে হলো রোজই বিছানার উপর রাখা নিজের পার্টনারের ভেজা টাওয়ালটা মেলে দেওয়া।

সংসার মানে হলো বিয়ের ডেট, একে অপরের জন্মদিনের তারিখ ভুলে গেলেও মানিয়ে নেওয়া।

সংসার মানে গাঢ় নীল রং নিজের পছন্দ না হওয়া সত্ত্বেও পার্টনারের পছন্দ বলে একদিন নীল রঙের পাঞ্জাবিটা পরে ফেলা, আবার তেমনি শাড়ি পরতে একটুও ভালো না লাগলেও এক দুটো দিন নিজের পার্টনারের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে একটা লাল টকটকে শাড়ি পরে পার্টনারের সামনে এসে দাঁড়ানো।

সংসার হলো একটা প্রতিজ্ঞা, যার ভেতর মান, অভিমান, রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, ব্যথা সবই থাকবে, কিন্তু দিনের শেষে একে অপরের মুখের সামনে ভাতের থালা তুলে দেওয়ার প্রতিজ্ঞাটা একে অপরকে করতে হবে।

সংসার মানে হলো মাসের শেষে টাকা-পয়সার হিসেব করতে করতে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে বলা "আজ তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবো, আজ আমায় একটু ঘুম পাড়িয়ে দাও"

সংসার মানে হলো মাঝরাতে বরকে ঘুম থেকে তুলে শিশির ভেজা রাস্তায় হাঁটতে যাওয়ার বায়না ধরা।

সংসার করা সহজ, কিন্তু একটা সংসারকে প্রতি মুহূর্তে যাপন করা সহজ নয়।

সংসার মানে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও একবার অন্তত ফোন করে জিজ্ঞেস করা "খেয়েছো"

সংসারে ওঠানামা, ভা ঙাগড়া থাকবেই, কিন্তু হাঁ'পিয়ে গেলে চলবে না, একে অপরকে মানিয়ে নিতে হবে, একে অপরের সমস্যায় পাশে থাকতে হবে, একে অপরকে সাহস যোগাতে হবে। কিভাবে বিবাহিত জীবন সুন্দর করবেন: ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:

১. একসাথে কখনো রেগে যাবেন না

বিবাহিত জীবনে রাগ আসতেই পারে, তবে কখনোই একসাথে রেগে যাবেন না। একজন যদি রেগে যান, আরেকজন যেন শান্ত থাকেন। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

২. একসাথে সময় কাটানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুজন একসাথে বসে গল্প করা, রান্না করা, ঘুরতে যাওয়া বা দিনে অন্তত একবেলা একসাথে টেবিলে খাওয়া—এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো সম্পর্ককে দৃঢ় করে। সময় দিন এবং সময় উপভোগ করুন।

৩. ইগো বাদ দিয়ে ক্ষমা চাইতে শিখুন

ইগো অনেক সম্পর্কেরই শত্রু। নিজের ভুল হলে তা স্বীকার করুন এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান। ক্ষমা চাওয়াতে ছোট নয়, বরং সম্পর্ককে বড় করার ইচ্ছা প্রকাশ পায়।

৪. অতীত নিয়ে টানাটানি নয়। পুরনো ভুল বারবার মনে করিয়ে দেওয়া বা খোঁটা দেওয়া সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তোলে। বরং বর্তমান ঠিক রাখুন, ভবিষ্যৎ আপনাতেই সুন্দর হবে।

৫. পার্টনারকে সম্মান দিন। কখনো সঙ্গীকে ছোট করে কথা বলবেন না, বিশেষ করে অন্যের সামনে। বরং তার প্রশংসা করুন, মজা করলেও যেন অপমান না হয়। ভালোবাসা মানে সম্মান।

৬. মনে রাখুন, আপনারা একটি টিম

দুজনের লক্ষ্য আলাদা হলেও লক্ষ্যপানে যাওয়ার পথ এক। একে অপরের স্বপ্নে উৎসাহ দিন, সাহায্য করুন। পার্টনারের সাফল্যে খুশি হন—তাহলেই সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

৭. ঝগড়া হলে দিনের শেষটা ভালোভাবে শেষ করুন: ঝগড়া হতেই পারে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দিনের শেষে সব ভুলে ভালোভাবে দিনের সমাপ্তি করুন। ঠান্ডা মাথায় কথা বলুন, একে অপরকে বুঝুন।

৮. দোষ চাপানোর খেলা বন্ধ করুন

সবকিছুতেই পার্টনারকে দোষারোপ না করে আগে নিজের দিকটাও দেখুন। ভুল স্বীকার করার মানে সম্পর্কের প্রতি দায়িত্ববোধ।

৯. সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতি রাখুন

একই মানুষের সাথে সারাজীবন কাটানোর ইচ্ছা থাকতে হবে। বারবার মন অন্যদিকে গেলে সম্পর্ক টেকানো সম্ভব নয়। সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন আপনার সঙ্গীর প্রতি।

১০. গোপন কিছু রাখবেন না: সম্পর্কে স্বচ্ছতা খুব জরুরি। একে অপরের কাছে খোলা বইয়ের মতো থাকুন। সত্য গোপন রাখলে বিশ্বাসে ফাটল ধরে। প্রতিটি কথা, অনুভূতি শেয়ার করুন।

 শেষ কথা: বিবাহিত জীবন একটি সুন্দর যাত্রা, যেখানে দুটি মানুষ একে অপরের হাতে হাত রেখে পথচলা শুরু করে। সেই পথচলায় ঝড়-ঝাপটা আসবেই, কিন্তু পারস্পরিক ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। শুধু চাই—চেষ্টাটুকু এবং একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার!

ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করে নিজের টাইমলাইনে রেখে দিন।একটা পরিবারের মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে তার সন্তান যেটা ছেলে হোক বা মেয়ে হোক। অনেক এ ছেলেকে প্রাধান্য দেয় বেশি ছেলে বলে আর মেয়েকে কম প্রাধান্য দেয়া হয়। কারণ আমাদের পিচ্চি তান্ত্রিক পরিবারে পিতাই প্রধান সেই কারণেই ছেলে কি বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। মেয়ে তো মেয়ে এই আজকে হলো।কালকে বিয়ে দিয়ে দিলে শেষ 

।কিন্তু দেখা যায় কোন পরিবারের কাছে তার মেয়ে সন্তান এই কলিজা এটা হচ্ছে আমাদের সমাজের কিছু মানসিকতা এবং চিন্তাভাবনার সমস্যা। মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশী ভাগ যায় হয় আপনার একটা মেয়ে সন্তান হলো, তাকে আদর যত্ন ভালোবাসা দিয়ে আপনি মানুষ করলেন। সে যাই বলে আপনি তাই হাজির করেন। এরপর মেয়ে বড় হলো, আদরের রাজকন্যাকে তুলে দিলেন আরেকজনের হাতে বাকি জীবনের জন্য। ৪ ভাগের একটা ভাগ জীবন কেবল সে আপনার কাছে থাকার পরে বাকি ৩ ভাগ জীবন কাটাতে অন্যের হাতে সোপর্দ হলো। 

আপনি ভেতরে কন্যা বিদায়ের যন্ত্রণা নিয়েও একটা ছোট আশা রাখলেন মেয়েটা সুখে থাকবে হয়তো। আশা করলেন আমার মতোই তাকে যেন যত্ন করে কেউ। 

কিন্তু এরপর কি হলো? আপনার মেয়ের প্রতি কাজের মধ্যে ভুল! পান থেকে চুন খসলেই যা তা ব্যবহার। যাকে আপনি একটা একটা শব্দ শিখিয়েছেন বলতে, পরের ঘরে সে কথা বললেই তাকে হুমকি দেয়- "জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলবো একেবারে "। এসব জানার পরে হয়তো ইচ্ছে হবে ওই মানুষের বাচ্চার কলিজা ছিড়ে নিতে কিন্তু আপনি জানবেন না। আপনার মেয়ে আপনাকে এসব জানাবে না। 

আমি তাই মেয়ের মা হতে চাইনা কখনো। আমার মেয়ের জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলার হুমকি যে দেবে তাকে তো জ্যান্ত পুতে না দিলে আমি শান্তি পাব না। এত ধৈর্য্য এত সহ্য শক্তি আমার নেই। তাই আল্লাহর কাছে কখনো মেয়ে সন্তানের মা হতে চাই না। এত কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন আমাকে আল্লাহ না করুক। আমার ফুলের মতো কোমল মেয়েকে কারো কাছে গিয়ে লাঞ্চিত হতে হবে, দিনের পরে দিন মানসিক নির্যাতনে থাকতে হবে। এসব কখনো সে আমাকে বলবেও না, আমি কিভাবে সহ্য করব?

না কখনো মেয়ে চাইবোনা 🌸

সংসারে কেউ কারোর থেকে ছোট বা বড় হয় না, দুজনেই দুজনের পরিপূরক হয়, তাই সংসার করতে গেলে একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করা বড্ড জরুরি...রাস্তা দীর্ঘ, এমন কাউকে বেছে নাও যার সাথে তুমি কখনো বিরক্ত হবে না। (শারীরিক সম্পর্ক এবং শুধু বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্য মানুষ কখনো সংসার করে না) লেখা,, ফাইজা রহমান অনু...


ফিচার

আরও পড়ুন