ফয়সাল আজম অপু, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক এমপি মো. হারুনুর রশীদ ও সাবেক সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া জামায়াত নেতৃবৃন্দের ও নিজ দল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া জাকার করলেন কঠোর সমালোচনা।
হারুনুর রশীদ বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়া মানেই আশিভাগ সংস্কার হয়ে গেছে। কারণ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানুষের দাবি ছিল শেখ হাসিনা ভোট চোর, গণতন্ত্র হত্যাকারী, প্রতারক। তবে তারা যে অপরাধ করেছে তার বিচার হবে। কিন্তু বিচার একদিনের কাজ না, বছর লাগবে। অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদিষ্টা ড, ইউনূসের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন-ক্ষমতার কারণে নির্বাচনের সময় প্রলম্বিত করবেন না। আর প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলোতে সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল সেগুলো সংস্কার করলেই তো সংস্কার হয়ে গেল।
কাজেই সংস্কার সংস্কার করে কালক্ষেপণ না করে নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার তা করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। হারুনুর রশীদ বলেন-আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করছি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, এই সরকার ইতোমধ্যেই তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) বিএনপি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ও পৌর শাখার ব্যানারে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন। বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা মুক্তমঞ্চে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে হারুনুর রশীদ আরো বলেন-হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীকে পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণ করে দিয়েছিলাম। অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের ফলে সেই বাঁধ আজ হুমকির মুখে পড়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে প্রশাসন ঘেরাও করা হবে।
তিনি বলেন- দেশের এই পরিবর্তীত সময়ে আমরা কী বলতে পারবো অফিসে ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে? জনগণের মধ্যে আপনাদের নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপির এই নেতা চাঁপাইনবাবগঞ্জের জামায়াতের রাজনীতির কড়া সমালোচনা করেন। জামায়াত নেতৃবৃন্দের কঠোর সমালোচনা করে বলেন আপনারা কোরআনের আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম করতে চাইছেন? সেটা কিভাবে করবেন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে। মনে রাখবেন এসব কথা ভণ্ডামি ছাড়া কিছুনা।
"নির্বাচন ও সংস্কারের রোড ম্যাপ চাই” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া।
বক্তব্য তিনি খোদ নিজ দলের, জেলা বিএনপির জেলা আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়ার উদ্দেশ্য বলেন, আপনি আওয়ামী লীগ, জামায়াতের সমালোচনা না করে হারুন-পাপিয়ার পিছনে লাগছেন। ভুলে যাবেন না, খালেদা ম্যাডাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে আপনাকে লাথি দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন। আবারও আপনাকে সময় হলেই আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেয়া হবে। তিনি মাওলানা আজহারী ও মাওলানা আমির হামজা'র কঠোর সমালোচনা করেন।
জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা কৃষকদলের আহ্বাহক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মতি, পৌর বিএনপির সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বারেক, বিএনপি নেতা আকম শাহেদুল আলম বিশ্বাস পলাশ, জেলা ছাত্র দলের সাবেক সহসভাপতি মীম ফজলে আজিম।
এসময় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।