গত মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে কর্মরত হৃদয় আহমেদ-কে ডিবি মেডিকেল গেট এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। অভিযোগ ছিল, তিনি বাটার শো-রুম এবং ফুটপাথে ইসরায়েলের পতাকা সম্বলিত স্টিকার লাগিয়েছিলেন। এ ঘটনায় বাটার ম্যানেজার বাদী হয়ে মামলা করেন।
ঘটনার পরপরই The Red July ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং রাতেই সত্যতা যাচাই শুরু করে। পরদিন সকালে The Red july ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি এর উদ্যোগে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য সংগঠনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হৃদয় আহমেদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
পরিবার অভিযোগ করে, ডিবি অফিসে গিয়ে তারা হৃদয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়— "টাকা দিয়েও বাইর করতে পারবা না, এটা অনেক দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছে।"
হৃদয় আহমেদ বাটার গাঙ্গিনারপাড় শোরুমে সিড়ির পাশাপাশি দরজাতেও ইসরা--ইলের পতাকার স্টিকার লাগায়। এটা তার একটা ছোট ভুল ছিল। কিন্তু এটা বাটা শোরুমের লোকজন খুলে ফেললেই সমাধান হয়ে যেত। বা হৃদয়ের সাথে কথা বলে সমাধান করে ফেলতে পারত। কিন্তু তারা এটা না করে ইনসিকিউরড ফিল করে ডিবি কাছে অভিযোগ জানায়।
এই ব্যাপারটা ডিবি থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে কিন্তু পরে বাটার শোরুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে ম্যানেজার এটি অস্বীকার করে।কিন্তু আবার ডিবি অফিসে যাওয়ার পর উনারা বলেন বাটার শোরুমের ম্যানেজার মৌখিক অভিযোগ দেয় সে ভিত্তিতে উনারা তাকে ধরে নিয়ে আসে। প্রথম বলা হয় মামলা হয়ে গেছে। উনারা কিছু করতে পারবে না কোট ছাড়া তারপর আমরা খোঁজখবর নিয়ে কথা বলে জানতে পারি মামলা হয়নি। এই বিষয়টা তো বাটার ম্যানেজার হৃদয় ভাইয়ের সাথে কথা বলেও শেষ করতে পারতো তাই না। কিন্তু তিনি সেটা করে নাই। উনি যদি একজন দায়িত্ববান নাগরিক হয়ে কাজটা করে থাকতো তাহলে ছেলেটার সাথে কথা বলতো তাকে বুঝিয়ে বলতে পারতো না? না মানলে তারপরে সে আইনি সাহায্য নিতো এভাবে একজনকে হেরেস্তা করার কোন মানেই হয় না। কালকে থেকে ছেলেটা ডিবির কাছে ছিলো,, তার ফ্যামিলির এমন কেউ নাই যে তাকে সাহায্য করবে তার স্ত্রী তার মা কান্না করতেছে। বিবেচনা না করে এই কাজটা যে উনি করে দিলো আজকে যদি তার নামে মামলাটা হতো তার ফ্যামিলির কি হতো? এগুলো কি একবারও চিন্তা করেছি আমরা আমরাও বাটার ম্যানেজারের মত বিষয়গুলো না বুঝে না চিনতে-ভাবনা করে হুটহাট কাজ করি যেটা একদমই ঠিক না। যেটার জন্য একজনের ফুল ফ্যামিলি ধ্বংস হয়ে যায় এবং তার জীবন ও কলঙ্ক লেগে যায়। আমার মতে এভাবে হেনস্থা করা একটা অপরাধের মধ্যে পরে। ২ ঘন্টা আমরা অপেক্ষা করি ডিবি অফিসে ডিবি ওসি ছিল। না । আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসবো। ডিবি এসপি আসার পর আমরা ওনার সাথে সাক্ষাৎ করে সব ফর্মালিটি ফিলাপ করে এবং আমরা চারজন সাক্ষী দিয়ে উনাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে এবং তার ফ্যামিলির কাছে ফিরিয়ে দেই। উনি যখন ওনার ফ্যামিলির কাছে ফিরে যায় তখন ভাই উনার বউ এর চোখ দেখার মত ছিল না! আনন্দ দুঃখের কষ্টের কান্না ভেসে যাচ্ছিলো। আমার একটা পরামর্শ থাকবে সবার উদ্দেশ্যে, , যেকোনো ঘটনা যত বড় অপরাধ হোক না কেন আমরা সেটা আগে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টা সঠিক তথ্য টা জানবো নিজেদের মাধ্যমে মিটানোর চেষ্টা করবো যদি সেটা না হয় তাহলে আইনে সাহায্য নিবো। একটু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য কি হলো হৃদয় ভাইয়ের সাথে আমরা সবাই দেখতেই পারলাম আজকে।
The Red July ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো মনে করে, একটি মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নেওয়ার কারণে একজন নাগরিককে গুম করার চেষ্টা এবং হয়রানি করা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। এমন আচরণ ইসরায়েলি দমননীতির প্রতিচ্ছবি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উদ্ধার অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন: আকাশ অভি, আহ্বায়ক, The Red July ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি মাকসুদুল আলম পাভেল, সদস্য সচিব ফাইজা তাবাসুম তুয়া, মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত), জেলা কমিটি
শরীফুল ইসলাম, মুখপাত্র, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মহানগর কমিটি রানা, যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা কমিটি
এছাড়াও বিভিন্ন মানবাধিকারকর্মী ও সংগঠনের সদস্যরা এই উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
The Red July ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি ঘোষণা করেছে, তারা ভবিষ্যতেও রাষ্ট্রের অন্যায় দমননীতি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে এবং জনগণের অধিকার রক্ষায় মাঠে থাকবে।( লেখা ফাইজা রমান অনু)